ছবি ফেবু |
সত্যি বলতে রণবীর সিং কে আমার মোটেই পছন্দ ছিলনা। এখনও যে বিশাল পছন্দ তাও নয়। কেমন যেন লাড়েলাপ্পা চেহারা। হৃত্বিক রোশন এর মত কোই আর হাতের গুলি। আমির খান এর মত মোট্টে ভাল অভিনয় করতে পারে না। এরাও আবার নায়ক নাকি!!!! মা গো!!!! নতুন নতুন জিনিষ দেখলেই চোখ কুঁচকে আমি খুঁত খুঁজতে বসে যাই। সহজে খুশি হওয়ার বান্দা আমি নই। খাসা বলে যা কিছু গিলিয়ে দেবে, উহু ওটি হচ্ছেনা বাবা!! কিন্তু পরিস্থিতিটা হটাৎ আলাদা হয়ে গেল, একটু তো আগের থেকে বটেই। কি কুক্ষণে যে মরতে পদ্মাবতী থুড়ি পদ্মাবত দেখে ফেললাম। আর অমনি যা হওয়ার হল। রণবীর সিং কে ও ফস্ করে একটুকরো পছন্দ হয়ে গেল। কেলেঙ্কারি আর কাকে বলে।
সেই কলেজের দিন গুলো থেকেই আমি তথাকথিত ভিলেন চরিত্রের ভক্ত। মানুষ যবে থেকে সাহিত্য-টাহিত্য নিয়ে মাথা ঘামাতে শুরু করে তবে থেকেই ভালোর ভালোটাকে আরও চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখানোর তাগিদেই বোধ করি পচা জঘন্য চরিত্র গুলো ঢুকে পড়েছে সাহিত্যে। ইলিয়াড-ওডিসি, মহাভারত-রামায়ণে খল চরিত্র গিজগিজ করছে। তাদের ধুন্ধুমার দাপাদাপিতে মাঝেমাঝে গুড বয় টাইপ ক্যারেক্টাররা মিয়ে যাচ্ছে। রবীন্দ্রনাথ পর্যন্ত খল নায়কদের নিয়ে মন্তব্য করতে ছাড়েননি। শেক্সপিয়রের ফল স্টাফের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, কল্পনার রসে জারিত হয়ে চরিত্রগুলো সৃষ্টি হয়েছে বলে খল হয়েও আমাদের মনে সেগুলো দাগ কাটে। অতএব এর পরে খলনায়কদের প্রেমে গা না ভাসিয়ে উপায় থাকে না।
কিন্তু এই খল চরিত্ররা কারা? কি এদের সংজ্ঞা? আমার অন্যতম প্রিয় ব্লগার কাম লেখিকা K.M. Weiland সে নিয়ে বেশকিছু গবেষণা করছেন। তার মতে......... Possibly the
character's life will even be changed for the better by the events of thestory.
And yet it's still a downer, because the
character is moving from a positive
outlook to a negative one. His new Truth isn't sunshine and roses; it's cold
hard facts.
পাতি বাংলাতে খল নায়ক হল, সেইসব কুচক্রী লোকজন যারা অপরের ম্লান হয়ে যাওয়া মুখ দেখে পৈশাচিক আনন্দ পায়। নায়কের নিরীহ বুদ্ধির বিপরীতে কঠিন সব মারপ্যাঁচ হানে। এই সব করতে গিয়ে সে নিজেই নায়ক হয়ে বসে কখনও। বাস্তবে নায়ককে এডাল্ট করে তোলার (মূর্খ বন্ধু আর বুদ্ধিমান শত্রুর প্রবাদ যথাযথ) দায়িত্ব যার ওপর বর্তায়।
যাই হোক কথা শুরু হয়েছিল রণবীর সিং কে নিয়ে। একটা আদর্শ ভিলেন চরিত্র ঠিক যেমন যেমন হতে হয় সিং বাবু ঠিক তেমন তেমন পথ ধরেই এগিয়েছেন পদ্মাবত এ। এই হল প্রথম ধাপ আমার রণবীর সিং এর কাজের সাথে পরিচয় হওয়ার।
দ্বিতীয় ধাপে অবশ্যই আসে রণবীর সিং এর অভিব্যক্তির কথা। একজন অভিনেতার এক্সপ্রেশন ভাল হবে জানা কথা। তবে এতে আলাদা করে বলার কি তাকে! থাকে! যদি অভিব্যক্তির সাথে King of Expression চার্লি চ্যাপলিনের যোগসূত্র থাকে তো। সবাই এতদিনে জেনে গেলেও আমি জেনেছি সবে মাত্র। জেনেছি, দেখেছি এবং অবাক হতে বাধ্য হয়েছি। চ্যাপলিন মিউজিয়ামে তাঁর মূর্তি গুলির সাথে তাল রেখে যে অভিব্যক্তি উঠে এসেছে রণবীরের পোর্ট্রেটে সত্যি অদ্ভুত। এর বেশি আর কিচ্ছুই লেখার থাকেনা। যে ছেলের মধ্যে এতো গুন ঠাসাঠাসি করে থাকে সে ছেলে বাঁচলে হয়।
No comments:
Post a Comment