Tuesday 26 February 2019
Thursday 21 February 2019
Thursday 7 February 2019
নিজের বাড়ি
ছবি-ধার করা অবশ্যই।কিন্তু কার থেকে মনে পড়ছে না। |
মাঝে মাঝে খুব ইচ্ছে হয়। তোর আর আমার
ও যদি একটা নিজের বাড়ি হয়। এত্ত বড় না হলেও চলবে। নিজেদের বলার মত একটা বাড়ি। ভাবতে
বেশ লাগে। সবকটা ঘর, রোদ উপচে পরা বারান্দা দেখে দেখে মন শান্ত হবে। মন চাইলেই জানলা
খুলে দিতে পারব। হুড়মুড় করে ধুলো ভরা হাওয়া এসে ঢুকবে আমাদের ঘরে। আবার ইচ্ছা হলেই
দড়াম করে বন্ধ করে দেব সব দরজা-জানলা। কি হল কি হল বলে কেউ ভুরি ভুরি প্রশ্ন তুলবে
না। মন চাইলেই সাজাব যতনে ঘরের আনাচ -কানাচ। আবার ইচ্ছা না হলেই অবহেলায় ফেলে রাখব
সব কিছু। ধুলোর পাহাড় জমে উঠবে চেয়ার টেবিল, বই গুলোতে।
আলমারির সাজানো বই আলতুসে আলোয় ডুবে থাকবে। আলনা জুড়ে কাপড়-চোপড়,
ফুলদানীতে শুকনো ফুল, ফুঁড়িয়ে যাওয়া সাজের জিনিষ অগোছালো সবটা তোর আর আমার। সেই ছোট
বেলার দিন গুলোর মতই দেওয়াল ভরিয়ে দেব সাপ ব্যাঙ কাকের ঠ্যাং আঁকাতে। বকা খাওয়ার মার
খাওয়ার এক রত্তি ভয় থাকবে না। রঙে হাত চুবিয়ে যা খুশি তাই হবে লাল নীল দেয়ালা। বাকি
পরে থাকা রঙে না হয় নিজেদের রাঙিয়ে নেব।
আইনি কাগজে তোর আর আমার নাম থাকবে ভাগাভাগি
করে। তোর পুরটাও আমার, আর আমার সবটাও তোর। হারিয়ে গিয়েও যার টানে ফিরে আসা যায়। টুকরো
টুকরো ভেঙে ছড়িয়ে যেতে দেয়না যে। পাশাপাশি সময় গুলো বয়ে যাবে ঝড়ের মত। আমরা না থাকলেও
আমাদের গল্প শোনাবে যে বাড়ি। সত্যি বলছি ভীষণ রকম লোভ হয় এমন একটা বাড়ির জন্য।
Tuesday 5 February 2019
গকুল বাবুর লাউ - গাজরের পায়েস
ছবি - গুগল |
সারা বছর যে সময়টার জন্য অপেক্ষা করে
থাকেন গকুল সেনশর্মা সেই পৌষ পার্বণটাও হুস
হুস করে বেড়িয়ে যাচ্ছে চোখের সামনে দিয়ে। আর এই পৌষ সংক্রান্তির আসল মজা যাকে নিয়ে
সেই পিঠে পায়েসটাই তো ভাগল বা! কারণ আর কি পেটে সইছেনা তাই। কথায় বলে পেটে খেলে নাকি
পিঠে সয়। সকাল থেকে বাথরুম আর ঘর করতে করতে কথাটা এখন অত্যাচারে এসে ঠেকেছে। তার ওপর
ফেসবুকে সবাই যে রেটে পিঠের ছবি লাগাচ্ছে তাতে কেমন যেন একটা হতাশ ভাব ছেঁকে ধরেছে
গকুল বাবুকে। নিজের নামটাও মনে করতে ইচ্ছে করছেনা। সেটাও তার নিজের প্রিয় পিঠের নামের
একটা কিনা। নামটা রেখে ছিলেন দাদামশাই। তিনি নিজে বড় ভাল বাসতেন পিঠে পায়েস খেতে। আর
গকুল পিঠে ছিল তার মধ্যে সব থেকে প্রিয়। আজকের দিনে দাদামশাই বাড়ির কাউকে হেঁসেলে ঢুকতেই
দিতেন না। নিজেই সব করতেন নিজের হাতে করে। দাদামশাই লাউ আর গাজর দিয়ে দারুণ এক পায়েস
রান্না করতেন। তার পর বাড়ি শুদ্ধ সবাই সেদিন পিঠে দিয়েই ভোজন পর্ব শেষ করত। সেই পিঠে
পায়েসের স্বাদ আর গন্ধ এখনও যেন সমস্ত ইন্দ্রিয়ে মাখামাখি হয়ে আছে। রান্নার গুনটি না
পেলেও খাওয়ার গুনটা ষোলো আনা বাগে এনেছেন গকুল বাবু। নিজের বাড়িতেও প্রতি বছর পিঠে
হয়। ছেলের বউ ফিগার মেইনটেইন করার জন্য মিষ্টি খায়না। সে না খাক এই সব জিনিসে ভাগীদার
যত কম হয় তত ভাল। কিন্তু এইবার আসল খাইয়ে লোকের অসুখ বলে পিঠেই নাকি হবে না। উফ ভাবা
যায়! আগের দিন হলে এই সব অন্যায় কাজ করার সাহস পেত কেউ। সামান্য প্রতিবাদ করার চেষ্টাও
করেছিলেন কিন্তু সেটি বউ আর ছেলের দাপটে উড়ে গেছে। কেবল বউমাই এই বিষয়ে একটু সমর্থন
করেছিল। বলেছিল, আজ বাপি নাই বা খেতে পারুক কাল তো আর পেট খারাপ থাকবেনা। তার উত্তরে
শাশুড়ির বলেছিল তুমিই না হয় তাহলে পিঠে কর মা! সেই শুনে বেচারি আর কিছু বলার রিস্কটাই
নেয়নি। যাইহোক এখন আর ভেবে কি হবে...... আবার সেই একটি বছরের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
চোখ বুজে আধশোয়া হয়ে দুঃখের কথা ভাবছিলেন। রাত সাতটা বেজে গেল
আজকের দিনটাই শেষ, আর সাথে সাথে পিঠে খাওয়ার আশাও। হঠাৎ করে নাকের কাছে একটা গন্ধ পেলেন।
নিশ্চই পাশের বাড়িতে পায়েস বা পিঠে হচ্ছে। কিন্তু গন্ধটা এত কাছ থেকে আসছে যে!! চোখ
মেলেই দেখলেন বউমা দাঁড়িয়ে হাতে পায়েসের বাটি। হেসে বললো, বাবা আজ অফিসে আমার এক কলিগ
সবার জন্য লাউ গাজরের পায়েস এনেছিল। প্রতিবারই আনে। অন্যবার আমি খাইনা কিন্তু এইবার
আমার ভাগেরটা আমি আপনার জন্য নিয়ে এসেছি। মায়ের কাছে শুনলাম দুপুরের পর থেকে আপনার
আর তেমন কোন পেটের অসুবিধা হয়নি। তাই এখন খেলে কিচ্ছু হবেনা। আমি ডাক্তার কাকুকেও জিজ্ঞেস
করেছি। এইটুকু পায়েসে অসুবিধা হবেনা। আনন্দের চোটে প্রায় অভিভূত হয়ে গেলেন গকুল বাবু।
হাতটা বাড়িয়ে বললেন দাও মা!
উপকরণ- সময়- ৪৫ মিনিট
লাউ- কোরানো ২ কাপ
গাজর- কোরানো ১ কাপ
নারকেল- কোরানো ১ কাপ
দুধ-২ লিটার
কনডেন্সড দুধ-১ কৌটা
এলাচ গুঁড়ো-আধ চা চামচ
ঘি-৩ টেবিল চামচ
পেস্তা বাদাম কিশমিশ সাজানোর জন্য- পরিমাণ
মত।
প্রণালী- লাউ আর গাজর ফুটন্ত জলেতে আধ সেদ্ধ করতে হবে। তারপর
কাপড়ে চিপে শুকিয়ে নিতে হবে। ঘিয়ে লাউ ও গাজর হাল্কা ভেজে নিতে হবে। এবার ২ লিটার দুধ
ঘন করে নিয়ে লাউ ও গাজর নারিকেল দিয়ে ভাল করে নেড়ে নেড়ে ঘন হয়ে এলে এলাচ গুড়ো দিয়ে
নামাতে হবে। পেস্তা বাদাম কিশমিশ দিয়ে সাজিয়ে ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা পরিবেশন করতে হবে।
Subscribe to:
Posts (Atom)