Saturday 19 January 2019

শীতের দুপুরের প্রয়োজনীয় সব বিষয়াদি



অলি ও শীত দুপুর





অলির শীতের এই আলসেমি ভরা দুপুর গুলো দারুণ প্রিয়। কিছু করার নেই কিচ্ছুটি বলার নেই। খালি অনন্ত অফুরান সময় মেখে থাকে মনে। মা চলে গিয়ে অলির এখন আরও আরও বেশি অবসর। দেরিতে সে বরাবরই ঘুম থেকে ওঠে।  এখনও তাই করে। মা চলে যাওয়ার পর পর কিছু দিন তাড়াতাড়ি উঠত ঘুম থেকে। তাতে হিতে বিপরীত হল। অস্থিরতা বেড়েই গেল। কি লাভ হুট করে নিজেকে বদলে ফেলে! এইতো বেশ মজার জীবন। সময় যত খুশী তাড়া লাগাক অলির কোনোভাবেই গরজ নেই।  একা নিশ্চুপ নির্বিকার।  সময় যখন জোরসে তার মাথায় কিল কষায়।  সে সাতপাঁচ ভাবে। সময়কে নিজের চিন্তা দিয়ে হার মানায়। করলেও তো অনেক কিছুই করা যায়। লাভটা কি। দিনগত পাপ ক্ষয়। বাবা যতদিন আছেন।  তার পরে অলি একা।  আসলে অলি জন্ম থেকেই একা। আসলে সব্বাই একা। তাও একা থাকার ভয় আঁকড়ে ধরে, কামড় বসায় মেরুদণ্ডে। এই যে ছাদ ভর্তি মায়ের লাগানো ফুলগাছ গুলো কমে আসছে এক এক করে। একদিন সারা ছাদ ফাঁকা হয়ে যাবে। বাবা রোজকার পুজোর আগে গাছকে খেতে দিয়ে তার পরেই ঠাকুরকে খাওয়ায়। অলির বেশ মজা লাগে। ছোট্ট ছোট্ট মূর্তি গুলোর কত্তো তোয়াজ। সেও পরের জন্মে মূর্তি হবে সোহাগ পাবে। সোহাগ পেতে কারই বা খারাপ লাগে। সব আজগুবি ভাবনাতে ভরা অলির দুপুর গুলো। ফুরোয় না, শেষ হয় না, হারায় না, পালায় না একলা ফেলে। গা ঘেঁষাঘেঁষি করে থাকে, অলি ওম পায় তাদের। ভাবনারা বাবার গলা নকল করে অলিকে ডাক দেয়। ওঠ ওঠ সন্ধ্যা হল। বারান্দার আলোটা দিয়ে দে। অলি উঠে পরে আলসেমি রেখে পাশে। শীতের দুপুর, আলসেমি ভরা হিজিবিজবিজ গুলো গুছিয়ে রেখে দেয় আবার কালকের জন্য। আর মনে মনে মুচকি হাসে সময়ের কথা ভেবে। সময় পৌঁছানোর আগেই তার সব দেখা হয়ে যায় প্রতি বারে। চিন্তা ও সময়ের দৌড়ে সময় কে বার বার সে দুয়ো দেয়। সময় সেটা বোঝারও অনেক আগে।