Thursday 2 November 2017

বাটা

ছবি-ধার করা অবশ্যইকিন্তু কার থেকে মনে পড়ছে না 

তথাকথিত শপিং বলতে যা বোঝয়, মানে সব্বাই যা বুঝে ও করে থাকে আমার তাতে প্রবল অনীহা। কারণ আমার কেনাকাটা করতে খুব বেশি হলে ঘণ্টা খানেক লাগে। বাকিরা তার চার গুন পাঁচ গুন সময় নিয়ে শখ মেটায়। আর আমি চরমতর থেকে চরমতম একঘেয়েমির মধ্যে বাকি সময়টা কাটাই। কেনাকাটার আর এক বিরক্তিকর পর্ব হল জুতো কেনা। তার স্বপক্ষে আমার দৃঢ় যুক্তি আছে। আমার পায়ের মাপের জুতো পাওয়া মোটেই সহজ নয় এবং কঠিন কাজে আমি যথেষ্ট কুঁড়ে মানুষ। তাই আমার পরিত্রাতা একমাত্র বাটা আর মাঝে সাঝে খাদিমস্। বিরক্তিকর কাজটা পরের জন্য ফেলে রেখেছিলাম। ভরসা ছিল হাজরার বাটাতে ঢুকে চট জলদি সমস্যা সমাধান। সেই বুঝে গটগটিয়ে দোকানে ঢুকে প্রথমটায় বুঝতেই পারিনি ব্যাপারটা কি হল। জুতোর বদলে সারি দিয়ে জামা কাপড়ের থান সাজানো। তার পরও মনে হল বাটা বুঝি জুতোর পাশাপাশি থানও রাখছে। যা প্রতিযোগিতার যুগ ওয়ানস্টপ না হলে বুঝি শেষ রক্ষা নেই। তারপরও চোখ ঘুরিয়ে পাদুকার টিকিটিও না দেখতে পেয়ে যখন উসখুস করছি একজন এগিয়ে এসে জিজ্ঞাসা করলেন আমার কি চাই। আমি আমতা আমতা করে বললাম, আমি মানে জুতো- মানে এখানে বাটার জুতোর দোকান ছিল। কর্মচারীটি হেসে জানালেন বাটা বন্ধ হয়ে গেছে সেই ফেব্রুয়ারি মাসেই। বিষয়টা বুঝে বিশ্বাস করতে বেশ কিছু সময় লাগলো। বাকিদের কথা বলতে পারবনা, তবে আমার কাছে এটা মনখারাপ এর।


বহুদিন ধরেই, ঠিক জানিনা কতদিন, বাটা আমাদের তথাকথিত মিটিং পয়েন্টধারীর কাজ করছে। তেনার সাথে তেনাদের পাড়ায় টোটো করতে যাওয়ার আগে ও পরে বাটা। বাটার দোকানের সামনে থেকে পূজাবার্ষিকী কেনা। পাশে মিষ্টির দোকানে উঁকি দেওয়া। সব কিছুর সাথে বাটার দোকানটা যে কতটা জড়িয়ে ছিল তা আজ তার না থাকাতে বেশী করে মনে হচ্ছে। অনেকে আদিখ্যেতা বলতেই পারেন। কিন্তু আমার কাছে আবারও একটা পুরানো দিনের হারিয়ে যাওয়া। আনিচ্ছা সত্ত্বেও গ্রহণ করতে বাধ্য হওয়া।

2 comments: