সে ছিল ভীষণ রকম লোভী |
পুরনো এক জলাশয়ের ধারে এক কুমীর এসে থাকা শুরু করল। সে ছিল
ভীষণ রকম লোভী। লোভের কারণেই জলাতে থাকা প্রাণীদের সে ধরে ধরে খেতে লাগল। এমনকি জলার
পাশের প্রাণীরাও বাদ গেলনা তার কবল থেকে। যারা পালাতে পারল তারা বেঁচে গেছিল। কিছুদিনের
মধ্যেই জলাশয় ও আশেপাশের অঞ্চল প্রাণ শূন্য হয়ে উঠল। জলাতে কুমীর ছাড়া কোন জীবন্ত প্রাণী থাকল না। খিদের
জ্বালায় অল্পদিনের মধ্যেই কুমীরের অবস্থা খারাপ হয়ে গেল। কুমীরের কাণ্ড কারখানা সব পশু পাখিদের মাঝে জানাজানি হয়ে যায়।
কেউ ভুলেও সেই পথে পা মাড়ায় না।
সময় সুন্দর সুন্দর খাওয়ারের স্বপ্নে মশগুল ছিল |
রঘু থাকে জলাশয়েরই পাশের গ্রামে। আজ তার বাবা ফিরেছে অনেকদিন
পরে বাণিজ্য থেকে। মা তাই ঘরে মাংস রান্না করবে। কতদিন বাদে বাড়িতে ভালমন্দ খাওয়া দাওয়া
হবে। হাট থেকে মাংস কিনে ফেরার পথে তাই সে জলার রাস্তা ধরল যাতে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে
পারে। গ্রামের লোকেরা মোটেও সেই কুমীরের খবর জানত না। সেই জন্য রঘুও জলার পথ দিয়ে যাওয়ার সময় সুন্দর
সুন্দর খাওয়ারের স্বপ্নে মশগুল ছিল।
কুমীর আবার গলার স্বর নরম করে বলল |
কুমীর রঘুকে আসতে দেখল। রঘুর হাতে থাকা মাংসের গন্ধে লোভে তার জিভে জল
এসে গেল। প্রথমে কুমীর ঠিক করল রঘুকে বোকা বানিয়ে মাংসটা খাবে। পরে তার লোভী মন তাকে
রঘুকেও খেতে সায় দিল। সে এক ফন্দি আঁটল। প্রথমে সে রঘুকে অনুরোধ করবে তাকে একটু মাংস
খেতে দিতে। যেই সে সেটা দিতে কুমীরের আছে এগিয়ে আসবে অমনি কুমীর রঘুকেও কামড়ে ধরে জলে
টেনে নিয়ে যাবে। তাহলে রঘুর আর কিচ্ছুই করার থাকবে না।
কুমীর রঘুকে ডাকল, 'এই
যে ভাই শুনছো?
রঘু কুমীরকে দেখে দারুণ ভয় পেয়ে গেল। ছুটে পালাতে যাবে এমন
সময় কুমীর আবার গলার স্বর নরম করে বলল, 'আমি
অনেক দিন কিছুই খাইনি আমাকে এক টুকরো মাংস দেবে?'
রঘু বলল, 'না
না, তুমি আমাকে খেয়ে ফেলবে।
কুমীর তখন গলার স্বর কাঁদো
কাঁদো করে অনুরোধ করল, 'প্রতিজ্ঞা করছি আমি তোমার একটুও ক্ষতি করবো না। একটুকরো
মাংস দিয়ে আমার প্রাণটা বাঁচাও দয়া করে।খরগোশ কুমীর আর রঘুর কথা শুনছিল এক ঝোপের আড়াল থেকে |
অন্যদিকে এক খরগোশ কুমীর আর রঘুর কথা শুনছিল এক ঝোপের আড়াল
থেকে। আগে সে এই জলার কাছেই থাকত। কুমীরের অত্যাচারে সেও পালাতে বাধ্য হয়েছিল। কুমীরের
ওপর নজর রাখার জন্য সে ঝোপের আড়ালে লুকিয়েছিল। রঘুর জীবনের ক্ষতির আশংকা দেখে খরগোশ ঝোপ থেকে
বেড়িয়ে আসতে বাধ্য হল। খরগোশ কে দেখে কুমীরের লোভ আরও বেড়ে গেল। সে ভাবল আরে এতো দারুণ
হল। এক সাথে এতো খাওয়ার। প্রায় অনেক দিন পেট ভরানো নিয়ে আর মাথা ঘামাতে হবেনা। সে তখন
রঘুর দিক থেকে খরগোশের দিকে মুখ ফেরালো। সেই সুযোগে রঘু এক ছুটে গ্রামের দিকে দৌড় দিল।
তখন কুমীর রঘু পালাচ্ছে দেখে সেই দিকে এগিয়ে যাওয়ার অবকাশে খরগোশ এক ছুট্টে পগারপার।
ধূর্ত কুমীর দারুণ বোকা বনে গেল।
কুমীরকে দারুণ লাঠিপেটা করল |
রঘু হাঁপাতে হাঁপাতে গ্রামের লোকদেরকে গিয়ে সব জানাল। তখন গ্রামের
লোকেরা দল বেঁধে জলাতে এসে কুমীরকে দারুণ লাঠিপেটা করল। লোভী দুষ্টু কুমীরের ভীষণ শাস্তি
হল।
আফ্রিকান উপকথা থেকে প্রভাবিত
Besh! !
ReplyDelete